Friday, November 6, 2009

আত্নকথা..... আত্ন উপলব্দি

জবান বন্দী....

হারিয়ে যাওয়া অনেক কিছুই
বারবার ফিরে আসে স্মৃতিতে....

যেমন...

দেয়ালের ঐ ছেড়া তোয়ালে,
আমার ক্লান্তি মাখা দিনের নিরব সাক্ষী।
কিংবা ছোট্ট হয়ে যাওয়া পুরোনো পেন্ট
যা আমার কৈশরকে মনে করিয়ে দেয়।

অনেক পুরোনো এক ম্যানিব্যাগ...
দিয়েছিলো হয়তো কেউ একজন উপহার,
তাইতো আজও আকড়ে ধরে আছি।

কিংবা ছেড়া খাতা নতুবা বইগুলো...
যার বদৌলতে আমি আজ গ্রাজ্যুয়েট।
সবই আমার ভাঙ্গা সেল্ফে শোভা পাচ্ছে।
আরও কত কি....?

যেমনটি বেলকনির গ্রীলে থাকা পুরোনো সেই লুঙ্গি,
যা আমার প্রায় রাতের অত্যাচারের সঙ্গী।
এমনকি আমার বালিশের কাবার.....
সেও নিস্তার পাইনি....
প্রায় রাতেই চোখের জলে ভিজে গেছে
অতীতের ভুল করা দিনগুলির স্মৃতি।

আর সেল ফোনের বাটন গুলোও অতিষ্ট
আমার অত্যাচারে,
SMS আর Dial call এর যন্ত্রনায়
তার চেহারায় বদলে গেছে।

তবুও আকড়ে ধরে আছি.....
ছুটছি আর অপেক্ষা করছি তার.....................

Saturday, September 6, 2008

দ্বিমুখী

একটি গল্প, হতেও পারে সত্যি……… ক্লাশ ফোর কি ফাইভ। সব ছেলে-মেয়েরা ক্লাশে উপস্থিত। কারন আজ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আসবে এই বিদ্যালয়ে। হেড মাস্টার : আজ তোমরা কোনো প্রকার হট্টগোল করবে না। যে যার অবস্থানে দাড়িয়ে তাকে সম্মান জানাবে। আর যা যা জিগ্গেস করবে শুধু তাই উত্তর দিবে। কোনো প্রকার ঝামেলা করবে না। ছাত্ররা : জী স্যার। তো যথাসময়ে শিক্ষা কর্মকর্তা ঐ বিদ্যালয়ে হাজির। আর যথারীতি তিনি ঐ ক্লাশেই ঢুকলেন। শিক্ষা অফিসার : কেমন আছো তোমরা ? ছাত্ররা : জী স্যার ভালো আছি। স্যার আপনি ভালো আছেন তো ? হ্যাঁ বাচক ভাবে সাড়া দিলেন তিনি। তার পর তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা কি আমার সঙ্গে কিছু সময় কাটাতে তৈরী আছো ? এতে ছাত্ররাও সায় দিল। এবার শিক্ষা কর্মকর্তা : Ok, fine. তো তোমরা কি কেউ আমার একটি প্রশ্নের উত্তর বলতে পারবে ? সবাই তখন শিক্ষা কর্মকর্তার দিকে মনযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে। শিক্ষা কর্মকর্তা : তো আমাকে বলো যে, বৃষ্টি কিভাবে হয় ? সব ছাত্ররা হা করে বসে আছে। আর একজন আরেক জনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ কেউই বুঝতে পারছে না যে, উত্তরটা কিভাবে দিবে ? তো ঐ ক্লাশের সব চাইতে ফাজিল একটা ছেলে ছিল যে একদম পিছনের সাড়িতে বসেছিল। সে হাত উঠালো। ছাত্র : স্যার আমি বলতে পারবো। শিক্ষা কর্মকর্তা : আচ্ছা ঠিক আছে বলো। ছাত্র : স্যার তার আগে আমাকে জানতে হবে যে, আমি এক ঘন্টা আগেরটা বলবো নাকি এক ঘন্টা পরেরটা বলবো ? এমন Question হয়তো শিক্ষা কর্মকর্তা আশা করেননি। তাই স্বভাবত: তার এই প্রশ্ন শুনে মাথা খারাপ হয়ে গেছে যেমন, ঠিক তেমনি আরেক দিকে কেৌতুহল লাগলো। শিক্ষা কর্মকর্তা : আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি দুটোই বলো। ছাত্র : স্যার এক ঘন্টা আগে ধর্ম স্যার পড়ালেন যে, আল্লার আদেশে হযরত ইস্রাফিল (আ:) শিংগাই ফু দিলে তখন বৃষ্টি হয়। শিক্ষা কর্মকর্তা : তো তোমার এক ঘন্টা পরেরটা কি ? ছাত্র : স্যার এক ঘন্টা পরেরটা হলো, Sceince এর স্যার পড়ালেন যে- সমুদ্র, নদী-নালা,খাল-বিলের পানি সূর্যের তাপে বাষ্প হয়ে আকাশে মেঘে হয়ে ভাসতে থাকে। যখন অন্য আরেকটা মেঘের সঙ্গে সংঘর্ষ লাগে তখন বৃষ্টি হয়। এজন্যই স্যার জিগ্গাসা করেছিলাম কোনটা বলবো ? তো Visitor ভাইয়েরা, এবার বুঝতে পারছেন ? আমরা কোন শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা গ্রহণ করছি ? এই দ্বিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের একমুখো করে রাখছে। আমাদের কি একটা জায়গায় এসে দাড়ানো দরকার না ? আপনারা কি বলেন ? Next time আরো মজার মজার তথ্য নিয়ে আসবো। তো এবার এখানেই………………

Saturday, August 30, 2008

পরিস্থিতির মোকাবেলা

অনেক আগে এক স্পেনিস লেখিকার একটা বই পড়েছিলাম। সেখান থেকেই অনুবাদ করে দিলাম। গল্পটির সারমর্ম কিংবা সংক্ষেপে দিলাম। সময়টা Summer Season। ফ্রান্সের International Airport থেকে একটি যাত্রীবাহী বিমান নিউ ইউর্কের উদ্দেশ্যে রওনা হলো। পাশাপাশি সিটে বসা ইয়ং বয়সের ছেলে এবং মেয়ে। তারা দু’জনেই ফ্রান্সের ভিন্ন University তে পড়াশোনা করে। প্রথমত তারা পরিচিত হয় এবং পরে জানা যায়- ছেলেটির মাতৃভুমি- আমেরিকা আর মেয়েটির ফ্রান্সেই। একজনের নাম এডওয়ার্ড জিসান এবং মেরীয়ন জলী। তারা Summer এর ছুটি কাটাতে আমেরিকা যাচ্ছে। খুব বেশী একটা সময় পাওয়া যায়নি তাদের মধ্যে ঘনিষ্টতা হতে। কিন্তু জিসান Already মেয়েটি’র প্রেমে পড়ে গেছে। কিন্তু প্রকাশ করতে পারছে না। আর তাছাড়াও হাতে সময়ও নাই যে, সে তার মনের কথাগুলো বলতে পারবে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস… দু’জন Airport থেকে নামার পর আর কথা বলতে পারেনি, শুধুমাত্র তাদের ফোন নাম্বার এবং জলী’র হোটেলের নাম ছাড়া। তো যাই হোক। জিসান তার বাসায় এসেছে, কিন্তু কি যেন ফেলে এসেছে। তাকে খুব উদাস উদাস লাগছে। সঙ্গে সঙ্গেই হোটেলে ফোন, কিন্তু ততক্ষনে জলী বের হয়ে গেছে তার এক Cousin এর বাসার উদ্দেশ্যে। বলা বাহুল্য যে, জিসান এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য। যার বাবা আমেরিকার আন্ডারওর্য়াল্ডের ডন। জিসান তার একমাত্র সন্তান। তারা বিশাল এক প্রাসাদে বাস করে, যেখানে একটা মশা ঢুকতে গেলেও ধরা পড়ে। আর জলী এক সাধারন পরিবারের সন্তান। তার বাবা একটি বিখ্যাত কোমল ড্রিংকস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। তো যাই হোক, জিসান .. জলী’র হোটেলে গিয়েছিল আজ। কিন্তু পায়নি। ইদানিং জলী’র মোবাইল ফোনটাও Off থাকে। এভাবে জিসান বেশ কয়েকদিন জলীর হেটোলে গিয়ে তাকে না পেয়ে ফেরত এসেছে। আস্তে আস্তে ছেলেটা কেমন জানি চুপচাপ হয়ে যাচ্ছে। তার ফুফু এটা বেশ কয়েকদিন লক্ষ্য করেছে। কিন্তু কিছুই বলেনি। এদিকে জলী জিসানকে শেষবার বলেছিল-আমি যেদিন আমেরিকা থেকে চলে যাব, সেদিন তুমি আমাকে বিদায় দিতে আসবে কি জিসান ? জিসান: অবশ্যই। কেন নয় ? জিসান বারবার জলী’র ফোনের অপেক্ষায় থাকে। কখন জলী তাকে ফোন করে বলবে-জিসান, আমাকে Airport-এ পেৌছে দিবে না ? একদিন রাতে জিসানের বাবা দেখে; জিসান বেলকনিতে একা একা দাড়িয়ে কি যেন ভাবছে। জিসানের বাবা : জিসান, কি হয়েছে তোমার ? এত উদাস লাগছে কেন তোমাকে ? জিসান : কই নাতো Dad। জিসানের বাবা : আমি বেশ কিছুক্ষন ধরে দেখছি… তুমি কি যেন ভাবছো ? Even তুমি আমার কাছে আসার শব্দটা পর্যন্ত টের পাওনি । What happened my dear friends ? জিসান : না মানে, Dad আসলে তোমাকে ব্যাপারটা বলে কোন লাভ হবে না জেনেই তোমাকে বলতে চাইনি। জিসানের বাবা : তার মানে ? তখন জিসান তার বাবাকে বিস্তারিত সবই বলে। জিসানের বাবা : এই ব্যাপার ! ঠিক আছে। তোমার যত টাকা লাগে তুমি নিয়ে যাও এবং আমি দেখতে চাই- আমার ছেলে, আমেরিকার মাফিয়া ডনের ছেলে সামান্য এই কাজে হেরে যাবে। Impossible। জিসান : সব কিছু টাকা দিয়ে হয় না Dad। তার বাবা বললো, চেষ্টা করলে সবই সম্ভব। শুধু কেৌশল জানা থাকা চাই। বলেই উনি বের হয়ে গেলেন। যথারীতি জলী’র Summer এর ছুটি শেষ হয়ে আসছে। হঠাত কোন এক দুপুরে জলী’র ফোন : হ্যালো । জিসান আমি আগামীকাল দুপুরের ফ্লাইটে চলে যাচ্ছি। তুমি কি আমাকে বিদায় দিতে আসবে ? কোথায় আসবো ? -জিসানের প্রশ্ন। জলী বললো, আমার হোটেলে এস। একসঙ্গেই বের হব। জিসান বললো-ঠিক আছে। এবার জিসান মহা খুশি যে, অনেকদিন পর সে আগামীকাল সময় পাবে। কিন্তু পরক্ষনেই ভাবলো- আরে ওর হোটেল থেকে Airport এর দুরত্ব তো খুব বেশী না।বড় জোর ২০মিনিটের পথ। তাহলে কি সম্ভব না। কি করে সম্ভব ? এত অল্প সময়ে কি প্রেমের কথা বলা যায় ? আবার চিন্তায় পড়ে গেলো জিসান। সারারাত ভাবে। রাতে ভাবতে দেখে ফুফু এগিয়ে গেলো তার কাছে। ফুফু : জিসান Can I help you ? কারন আমি বুঝতে পারছি- তুমি কোন এক সমস্যায় আছো। হ্যাঁ ফুফু। আপনি ঠিকই বুঝতে পেরেছেন। তারপর সব ফুফুর সঙ্গে শেয়ার করে জিসান। তখন ফুফু তাকে একটি আংটি দেয় এবং বলে- এই আংটির মধ্যে তোর ভালবাসা লুকিয়ে আছে। এই আংটি দিয়েই তোর বাবা তোর মাকে ভালবেসেছিল। এবার তোর পালা। মাথায় কিছূ খেলছে না। ফুফু’র দেয়া আংটি টা পকেটে রেখে দেয়। রাতেই বাবার সঙ্গে আবার দেখা। বাবাকে সবই বলে। বাবা তাকে একি কথা আবার বলে চলে যায়। সারারাত না ঘুমিয়ে দিনের বেলায় ঘুমোচ্ছে। দুপুরে তাড়াহুড়ো করে হোটেলের দিকে ছুটলো। তার মার্সিটিজ নিয়ে হোটেলের দ্বারে হাজির। জলী এসে গাড়ীতে উঠলো। একপাশের জানালা খুলে জিসান তার পকেটের আংটি টা বের করে হাসছে। এই ভেবে যে, এই আংটির মধ্যে নাকি তার ভালবাসা লুকিয়ে আছে। হঠাত আংটি টা জানালা দিয়ে বাইরে পড়ে যায়। ড্রাইভার গাড়ী রাখো। গাড়ী থামিয়ে এবার আংটি খোঁজা। অবশেষে পেলোও। কিন্ত গাড়ীতে উঠার পর পরই মহা জ্যাম। I mean Traffic জ্যাম। আমেরিকার ইতিহাসে এ এক বিরল ঘটনা। যে রাস্তায় কোন এ যাবত কালে এত বড় জ্যাম আর হয়নি যে, তারা যেখানে ছিল; সেখান থেকে Airport যেতে একটা ঈঁদুরের সময় লাগবে তিন ঘন্টা। তো এবার ভাবো, একটা মানুষের কতক্ষন সময় লাগতে পারে ? এই জ্যামের মাঝে বসে কি করবে ? এমন অবস্থা যে, ঐখান থেকে Airport যাওয়াও সম্ভব নয়। মনে হয় পুরো আমেরিকার গাড়ীগুলো এই একি রাস্তায় এসে ভীড় করেছে। যাক বাবা ! জিসানের দরকার সময়। সে তো এবার পেল। সে এক এক করে আস্তে আস্তে তার জমানো কথা গুলো বলতে শুরু করলো। এক পর্যায়ে সে তার মনের কাঙ্খিত কথাটিও বলে দিলো। তারপর প্রায় দীর্ঘ ৪ (চার) ঘন্টা পর জ্যাম ছেড়ে গেলো। ততক্ষনে জলী’র ফ্লাইট ক্যানসেল। বাধ্য হয়েই আবার পরেরদিনের ফ্লাইট কনফার্ম করতে হলো। এরপর জলী হোটেলে এবং জিসান তার বাসায় ফিরে এল। জিসান ফুফুকে সবই বললো। যথারীতি রাতে জিসানের বাবার সঙ্গে দেখা হলো। জিসানের বাবা : কি খবর তোমার ? জিসান : ভালো। তারপর সবই বলা হলো। তখন তার বাবা বললো- এ সবই টাকার জোরে হয়েছে। কি ভাবে ? আমি তো এখানে টাকার জোর কোন কিছুতেই পাচ্ছি না। জিসান মন্তব্য করলো। তার বাবা বললো- তোমার দরকার ছিল সময়। আর আমি তোমাকে সেই সময়টা টাকা দিয়ে কিনে দিয়েছি। আমেরিকার ইতিহাসে নিউ ইউর্কের Airport এর রাস্তায় কখনও এদেশের মানুষ এত লম্বা জ্যাম দেখেনি। যা আমি করতে পেরেছি। শুধু নিউ ইউর্ক নয়, আমি এই শহরের বাইরেরও যত গাড়ী ছিল; সব এই একি রাস্তায় নিয়ে আসতে বাধ্য করেছি। আর তাই এতবড় জ্যাম তৈরী হয়েছিল। So, এবার তোমার নিশ্চয় বোঝতে অসুবিধা হচ্ছে না যে, টাকা দিয়ে সবই করা সম্ভব। শুধু কেৌশল জানতে হবে। বেশ মজা লেগেছিল গল্পটা পড়ার সময়। আপনাদের কেমন লাগলো ?